ইথানল-এর অপর নাম ইথাইল অ্যালকোহল। এর রাসায়নিক সংকেত CH3-CH2-OH। জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন কেরােসিন, ডিজেল, পেট্রল প্রভৃতির মতাে ইথানলকে পােড়ালেও তাপ উৎপন্ন হয়। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির মতাে ইথানলকেও তাপ ইঞ্জিনে ব্যবহার করে কলকারখানা, গাড়ি, বিমান, জাহাজ প্রভৃতি চালানাে যেতে পারে। উত্তর আমেরিকাসহ অনেক দেশে জীবাশ্ম জ্বালানির সাথে ইথানলকে মিশিয়ে তাপ ইঞ্জিনে ব্যবহার করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সব গাড়িতে পেট্রলের সাথে শতকরা 10 ভাগ ইথানল মিশিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাই আমরা যত ইথানলকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করব ততই জীবাশ্ম জ্বালানির উপর চাপ কমবে। আমরা যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করি তা অনবায়নযোগ্য । খনিজ জ্বালানির মজুদ একসময় শেষ হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় যদি ইথালনকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে অবশ্যই খনিজ জ্বালানির মজুদের উপর চাপ কম পড়বে। মজার ব্যাপার হলাে- ইথানল হলাে একটি জৈব রাসায়নিক যৌগ, যা শ্বেতসার জাতীয় শস্য দানা যেমন- আলু, ভুট্টা, ইক্ষু প্রভৃতি থেকে গাজন প্রক্রিয়ার (fermentation reaction) মাধ্যমে উৎপন্ন করা যায়। এজন্য ইথানলকে জৈব জ্বালানি (bio-fuel) বলা হয়। অধুনা নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে সেলুলােজ (উদ্ভিদের দেহের উপাদান) থেকে ইথানল উৎপাদন করাও সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে, কৃষিকাজের মাধ্যমে শস্য ও উদ্ভিদ তথা ইথানলের নিয়মিতভাবে উৎপাদন নিশ্চিত করা সম্ভব। অতএব খনিজ জ্বালানির মতাে ইথানল ফুরাবার ভয় নেই। তাই ইথানলকে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার হিসেবে করা হয় ।