ইথানল এর ব্যবহার ও গুরুত্ব:
ইথানলকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ইথানল, যার অপর নাম ইথাইল অ্যালকোহল। এর রাসায়নিক সংকেত CH3-CH2-OH ।এটি একটি দাহ্য তরল রাসায়নিক পদার্থ। খনিজ জ্বালানি যেমন— কেরােসিন, পেট্রোল, ডিজেল প্রভৃতির মতাে ইথানলকে পােড়ালে তাপ উৎপন্ন হয়। তাহলে খনিজ জ্বালানির মতাে ইথানলকে তাপ ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে কলকারখানা, গাড়ি, বিমান, জাহাজ প্রভৃতি চালানাে যেতে পারে। ব্রাজিল, উত্তর আমেরিকাসহ উন্নত দেশসমূহে ইথানলকে পেট্রোলিয়াম (খনিজ জ্বালানি) -এর সাথে মিশ্রিত করে তাপ ইঞ্জিনে ব্যবহার করা হয়। আমেরিকার মােটামুটি সব কারগাড়ি পেট্রোলের সাথে শতকরা 10 ভাগ ইথানলমিশ্রিত জ্বালানি ব্যবহার করে রাস্তায় চলাচল করছে। ব্রাজিলের সরকার খনিজ জ্বালানির সাথে শতকরা 25 ভাগ ইথালন মিশ্রিত করে ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করেছে। এছাড়াও আধুনিককালের ও পরবর্তী প্রজন্মের ব্যবহারযােগ্য শক্তি উৎপাদনের প্রযুক্তি বলে খ্যাত ‘ফুয়েল সেল’ (fuel cell) -এর জ্বালানি হিসেবে অ্যালকোহল (মিথানল ও ইথানল) ব্যবহৃত হচ্ছে। খনিজ জ্বালানির মজুদ একসময় শেষ হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় যদি ইথালনকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে অবশ্যই খনিজ জ্বালানির মজুদের উপর চাপ কম পড়বে। মজার ব্যাপার হলাে- ইথানল হলাে একটি জৈব রাসায়নিক যৌগ, যা শ্বেতসার জাতীয় শস্য দানা যেমন- আলু, ভুট্টা, ইক্ষু প্রভৃতি থেকে গাজন প্রক্রিয়ার (fermentation reaction) মাধ্যমে উৎপন্ন করা যায়। এজন্য ইথানলকে জৈব জ্বালানি (bio-fuel) বলা হয়। অধুনা নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে সেলুলােজ (উদ্ভিদের দেহের উপাদান) থেকে ইথানল উৎপাদন করাও সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে, কৃষিকাজের মাধ্যমে শস্য ও উদ্ভিদ তথা ইথানলের নিয়মিতভাবে উৎপাদন নিশ্চিত করা সম্ভব। অতএব খনিজ জ্বালানির মতাে ইথানল ফুরাবার ভয় নেই। তাহলে, ইথানলের বাণিজ্যিক উৎপাদন ও বিকল্প জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের প্রযুক্তি উদ্ভাবন একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।