রাসায়নিক বিক্রিয়াকে রাসায়নিক সমীকরণ আকারে লেখার জন্য কতগুলাে নিয়ম মানা হয় সেগুলাে হচ্ছে :
- গণিতে যেমন সমীকরণের মাঝে একটি সমান চিহ্ন (=) ব্যবহার করা হয় তেমনি কোনাে বিক্রিয়ার বিক্রিয়ক বাম পাশে এবং উৎপাদ ডান পাশে লিখে তাদের মাঝে একটি সমান চিহ্ন (=) বা তীর চিহ্ন (→) বসাতে হয়।
- বিক্রিয়কসমূহ এবং উৎপাদসমূহকে রাসায়নিক প্রতীক বা সংকেতের মাধমে লেখা হয়। বিক্রিয়ায় একাধিক বিক্রিয়ক থাকলে বিক্রিয়কসমূহের মাঝে যােগ চিহ্ন দিতে হয় এবং একাধিক উৎপাদ থাকলে উৎপাদসমূহের মাঝে যােগ চিহ্ন দিতে হয়।
- যে প্রক্রিয়ায় সমীকরণের বাম পাশের বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর সংখ্যা এবং ডান পাশের ঐ একই মৌলের পরস্পর সংখ্যা সমান করা হয় সেই প্রক্রিয়াকে রাসায়নিক সমীকরণের সমতা বলা হয়। রাসায়নিক সমীকরণের সমতা বিধান করতে হয় ।
2H2 + O2 → 2H2O
2H2 + O2 = 2H2O
- কখনাে কখনাে বিক্রিয়ার সমতা না করেও বিক্রিয়া দেখানাে হয়, তখন সমান চিহ্ন (=) না দিয়ে তীর চিহ্ন (→) ব্যবহার করতে হয়।
H2 + O2 → H2O
- অনেক সময় বিক্রিয়ক এবং উৎপাদের ভৌত অবস্থা উল্লেখ করেও রাসায়নিক সমীকরণ লেখা হয়। বিক্রিয়ক এবং উৎপাদের ভৌত অবস্থা পদার্থের ডান পাশে প্রথম বন্ধনীর মধ্যে প্রকাশ করা হয়। এক্ষেত্রে কোনাে পদার্থ কঠিন হলে তার ইংরেজি নাম (Solid) এর প্রথম বর্ণ (s) লিখতে হয়, কোনাে পদার্থ তরল (liquid) হলে তার ইংরেজি নামের প্রথম বর্ণ (l) লিখতে হয়, কোনাে পদার্থ গ্যাসীয় তার ইংরেজি নাম (gas) এর প্রথম বর্ণ (g) লিখতে হয়। কোনাে পদার্থ পানিতে দ্রবীভূত হলে সেই দ্রবণকে বলা হয় জলীয় দ্রবণ। জলীয় দ্রবণের ইংরেজি নাম (aquas solution) এর প্রথম 2টি বর্ণ (aq) লিখতে হয়। যেমন
2H2(g) + O2(g) → 2H2O(l)
রাসায়নিক সমীকরণ এর উদ্দেশ্য হচ্ছে কোন কোন পদার্থ বিক্রিয়া করে কোন কোন পদার্থ হয়েছে সেটি দেখানাে। অনেক সময় সমতা না করেও সেটি দেখানাে যেতে পারে। যেমন
2H2 + O2 → 2H2O
- তবে যদি কোনাে বিক্রিয়ায় কতটুকু তাপ উৎপন্ন হয় বা কতটুকু তাপ শােষিত হয় তা সমীকরণে দেখাতে হয় তবে সেক্ষেত্রে রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমতা করতে হবে এবং বিক্রিয়ক এবং উৎপাদের ভৌত অবস্থা (যেমন কঠিন, তরল, গ্যাসীয় অবস্থা, জলীয় অবস্থা ইত্যাদি) লিখতে হয় ।
কঠিন কার্বন অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে রাসায়নিক সমীকরণকে নিম্নরূপে লেখা যায়।
কঠিন ক্যালসিয়াম কার্বনেট হাইড্রোক্লোরিক এসিডের জলীয় দ্রবণের সাথে বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, গ্যাসীয় কার্বন ডাই অক্সাইড এবং তরল পানি উৎপন্ন হয়।
কোনাে কোনাে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তাপ প্রয়ােগে সংঘটিত হয় সেক্ষেত্রে তীরের উপর একটি ডেলটা চিহ্ন (△) দিতে হবে। যেমন কঠিন ম্যাগনেসিয়াম নাইট্রেটকে তাপ প্রয়ােগ করলে ম্যাগনেসিয়াম। অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড গ্যাস এবং অক্সিজেন গ্যাস তৈরি হয়।