পানি সমযােজী যৌগ হওয়া সত্ত্বেও আয়নিক যৌগ সােডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) পানিতে দ্রবীভূত হয়। কারণ পানির অণুতে একটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে সমযােজী বন্ধনে আবদ্ধ থাকে।
কিন্তু অক্সিজেন পরমাণু হাইড্রোজেন পরমাণু থেকে অধিক তড়িৎ ঋণাত্মক হওয়ায় পানির অণুর সমযােজী বন্ধনীতে ব্যবহৃত ইলেকট্রন দুটি অক্সিজেনের দিকে সামান্য পরিমাণ সরে যায়।
ফলে , অক্সিজেন পরমাণু আংশিক ঋণাত্মক আধান ও হাইড্রোজেন পরমাণু আংশিক ধনাত্মক আধান প্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ পানির অণুতে আংশিক ধনাত্মক এবং আংশিক ঋণাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয়। এরকম ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধানপ্রাপ্ত সমযােজী যৌগকে পােলার সমযােজী যৌগ বলে।
সুতরাং পানি একটি পােলার সমযােজী যৌগ এবং দ্রাবক হিসেবে পানি একটি পােলার দ্রাবক।
পােলার দ্রাবক পানিতে আয়নিক যৌগ যােগ করলে পানির অণুগুলাের ধনাত্মক প্রান্ত আয়নিক যৌগের ঋণাত্মক প্রান্ত বা অ্যানায়নকে আকর্ষণ করে।
একইভাবে পানির অণুর ঋণাত্মক প্রান্ত আয়নিক যৌগের ধনাত্মক প্রান্ত বা ক্যাটায়নকে আকর্ষণ করে।
এই আকর্ষণ বলের মান যখন আয়নিক যৌগের অ্যানায়ন ও ক্যাটায়নের মধ্যকার আকর্ষণ বল থেকে বেশি হয় তখন অ্যানায়ন ও ক্যাটায়ন পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পানির অণু দিয়ে পরিবেষ্টিত হয়। এভাবে আয়নিক যৌগ পানিতে দ্রবীভূত হয়।
খাবার লবন অর্থাৎ সােডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) একটি আয়নিক যৌগ। তাই NaCl পােলার দ্রাবক H2O তে দ্রবীভূত হয়।
খাবার লবন পানির সংস্পর্শে আসলে পানির অণুর ধনাত্বক হাইড্রোজেন প্রান্ত, সােডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) এর ঋণাত্বক ক্লোরাইড আয়ন (Cl–) কে আকর্ষণ করে এবং পানির অণুর ঋণাত্বক অক্সিজেন প্রান্ত, ধনাত্বক সােডিয়াম আয়ন (Na+) কে আকর্ষণ করে।
এই আকর্ষণ বলের মান যখন NaCl এর Na+ ও Cl– এর মধ্যকার আকর্ষণ বল থেকে বেশি হয় তখন Na+ ও Cl– পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পানির অণু দিয়ে পরিবেষ্টিত হয় ।
NaCl + H2O →
ফলে NaCl সহজেই পানিতে দ্রবীভূত হয়।