একই পদার্থের ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রায় ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা প্রদর্শন করার কারণ ব্যাখ্যা করো । অথবা তাপমাত্রা পরিবর্তন করে একই পদার্থ কখনাে কঠিন, কখনাে তরল বা কখনাে গ্যাসীয় অবস্থায় রূপান্তর করা যায়।

একই পদার্থ ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রায় বিভিন্ন  অবস্থা অর্থাৎ কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় থাকতে পারে। এর কারণ মূলত তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে পদার্থের আন্তঃআণবিক শক্তি ও আন্তঃআণবিক স্থানের পরিবর্তন। আন্তঃআণবিক শক্তির কারণে পদার্থের অভ্যন্তরস্থ অণুসমুহ পরস্পরের সন্নিকটে থাকতে চায়। পদার্থের অণুসমূহ সর্বদই কম্পমান অবস্থায় থাকে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে অণুসমূহের গতিশক্তি  বৃদ্ধি পায়। ফলে কম্পন বৃদ্ধি পায় এবং আন্তঃআণবিক শক্তি হ্রাস পায় । অন্যদিকে তাপমাত্রা কমালে  অণুসমূহের কম্পন্ন হ্রাস পায় এবং আন্তঃআণবিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। এ দুটি বিপরীত ক্রিয়ার ফলে  কোনো পদার্থ তিনটি ভিন্ন অবস্থায় উপনীত হয় ।

 ১. কঠিন অবস্থা:

আন্তঃআণবিক শক্তির তুলনায় অণুসমূহের কম্পন শক্তি অনেক কম হলে অণুসমূহ নির্দিষ্ট অবস্থান বিরাজ করে। ফলে অণুসমূহেৱ মধ্যবর্তী দূরত্ব হ্রাস পায় এবং অণুসমূহ পরস্পর ঘন সন্নিবিষ্ট হয়। ফলে পদার্থ নির্দিষ্ট আকৃতি অর্জন করে এবং কঠিন আকার ধারণ করে।

 ২. তরল অবস্থাঃ

তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে পদার্থের অণুসমূহ গতিশক্তি অর্জন করে । ফলে পদার্থের অণুর কম্পনশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং এত বেশি বৃদ্ধি পায় যে, অণুসমূহ আর নির্দিষ্ট অবস্থানে স্থির  না থেকে বিক্ষিপ্তভাবে চলাচল করে। ফলে অণুসমূহের আন্তঃআণবিক শক্তি হ্রাস পায় এবং এক পর্যায়ে কঠিন পদার্থ তার দৃঢ়তা হারিয়ে তরল পদার্থে পরিণত হয় ।

 ৩. গ্যাসীয় অবস্থাঃ

তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি করলে অণুসমূহের গতিশক্তি এত বৃদ্ধি পায় যে, তারা আন্তঃআণবিক শক্তি ছিন্ন করে পরস্পর হতে অনেক দূরে সরে যায় এবং প্রায় মুক্ত ভাবে চলাচল করে। এ অবস্থায় তরল পদার্থ গ্যাসীয় অবস্থায় পরিণত হয়  ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!