রাসায়নিক শক্তি ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব আলোচনা করো ।

রাসায়নিক শক্তি ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব:

আমরা শক্তি পাবার জন্য জ্বালানি পােড়াচ্ছি। মূলত আমরা জ্বালানির মাধ্যমে রাসায়নিক শক্তিকে ব্যবহার করছি। যদিও বর্তমান বিশ্বে সৌরশক্তি, নিউক্লিয়ার শক্তি, বাতাসের শক্তি, স্রোতের শক্তিকেও কাজে লাগানাে হচ্ছে, তবু জীবাশ্ম জ্বালানিই আমাদের প্রয়ােজনীয় শক্তির সিংহভাগ জোগান দেয়। প্রতিবছর জ্বালানি পুড়িয়ে 21.3 বিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড তৈরি করা হচ্ছে। গাছ সালােক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে। এছাড়া আরও কিছু প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় এর অর্ধেকটা ব্যবহার হয়। বাকি অর্ধেক পৃথিবীতে থেকে যায়। কার্বন ডাই-অক্সাইড ভারী গ্যাস বলে তা বায়ুমণ্ডলের নিচের অংশেই থেকে যায়। কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুর অন্য উপাদানের সাথে বিক্রিয়াও করে না। কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রচুর পরিমাণে তাপশক্তি ধারণ করতে পারে। এতে করে পৃথিবীর তাপমাত্রা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। একে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন (global warming) বলে। বৈশ্বিক উঞ্চায়নে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাবার কারণে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে সেটি সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। যে কারণে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশের বিশাল অংশ পানির নিচে ডুবে যাবে। কার্বন ডাই-অক্সাইড ছাড়াও আরও কিছু গ্যাস আছে যেগুলাে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির এ ঘটনাকে ‘গ্রিনহাউস প্রভাব বলে’ (greenhouse effect)। আর এ সকল গ্যাসকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলে। কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভূমিকা এক্ষেত্রে অন্যান্য গ্যাসের চেয়ে অনেক বেশি। জ্বালানি পােড়ানাের ফলে প্রাপ্ত গ্যাসগুলাে এসিড বৃষ্টির কারণ। এছাড়া জ্বালানি পােড়ানাের ফলে প্রাপ্ত গ্যাসগুলাে ফটোকেমিক্যাল ধোঁয়ার সৃষ্টি করছে। এসব গ্যাস বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরের সাথে বিক্রিয়া করে ওজোন স্তরের পুরুত্ব কমিয়ে দিচ্ছে। বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর সূর্যের আলাের ছাঁকনি হিসেবে কাজ করে। সূর্যের আলােতে অতিবেগুনি রশ্মি (ultra violet ray) থাকে, যা আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে। ওজোন স্তর এ অতিবেগুনি রশ্মিকে পৃথিবীতে আসতে বাধা প্রদান করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!