গলিত সােডিয়াম ক্লোরাইডের তড়িৎ বিশ্লেষণের কৌশল:
একটি কাচ বা চিনামাটির পাত্রে গলিত সােডিয়াম ক্লোরাইড নেওয়া হয়। গলিত সােডিয়াম ক্লোরাইডের মধ্যে সােডিয়াম আয়ন (Na+) ও ক্লোরাইড (Cl–) আয়ন থাকে। সােডিয়াম আয়ন ও ক্লোরাইড আয়ন চলাচল (migrate) করতে পারে। গলিত সােডিয়াম ক্লোরাইডের মধ্যে দুটি ধাতব দন্ড বা গ্রাফাইট দণ্ড প্রবেশ করাই। এ দণ্ড দুটির একটিকে ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করা হয় যাকে অ্যানােড এবং অপরটিকে ব্যাটারির ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করা হয় যাকে ক্যাথােড বলে । বিদ্যুৎ চালোনা শুরু করলে ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত ধনাত্মক তড়িৎদ্বার বা অ্যানােড ঋণাত্মক আধান যুক্ত Cl– আয়নকে আকর্ষণ করে, অন্যদিকে ব্যাটারির ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত ঋণাত্মক তড়িৎদ্বার বা ক্যাথােড ধনাত্মক আধানয়ক Na+ আয়নকে আকর্ষণ করে।
চিত্র : তড়িৎ বিশ্লেষ্য কোষে সােডিয়াম ক্লোরাইডের তড়িৎ বিশ্লেষণ
Cl– আয়ন অ্যানােডে ইলেকট্রন ত্যাগ করে ক্লোরিন গ্যাসে পরিণত হয়।
অ্যানােডে জারণ বিক্রিয়া:
Cl– → ½Cl2 + e–
অথবা
Cl– – e– = Cl
Cl– – e– = Cl
Cl+Cl=Cl2
অন্যদিকে Na+ ক্যাথােড থেকে ইলেকট্রন গ্রহণ করে ধাতব সােডিয়ামে পরিণত হয়। ক্যাথােডে বিজারণ বিক্রিয়া:
Na+ + e– → Na
ক্যাথােড কর্তৃক যে আয়ন আকর্ষিত হয় তাকে ক্যাটায়ন বলে এবং অ্যানােড কর্তৃক যে আয়ন আকর্ষিত হয় তাকে অ্যানায়ন বলে।
লিটমাস পেপারের সাহায্যে অ্যানােডের ক্লোরিন গ্যাস শনাক্তকরণ:
গলিত NaCl এর তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় অ্যানােডে উৎপন্ন গ্যাস একটি টেস্টটিউবে সংগ্রহ করে তার মুখে ভিজা নীল লিটমাস পেপার ধরলে লিটমাস পেপারের বর্ণ লাল বর্ণে পরিণত হবে এবং ক্লোরিন গ্যাসের উপস্থিতি প্রমাণ করবে।
যেহেতু ক্লোরিন পানির সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোক্লোরিক এসিড এবং হাইপােক্লোরাস এসিড উৎপন্ন করে তাই নীল লিটমাস লাল লিটমাসে পরিণত হয়।