জারণ-বিজারণ একটি যুগপৎ ক্রিয়া/ জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া মানেই ইলেকট্রন স্থানান্তর প্রক্রিয়া/ জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া ইলেক্ট্রনের স্থানান্তর ঘটে/ জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া একই সাথে ঘটে:
আধুনিক বা ইলেক্ট্রনীয় মতবাদ অনুসারে আমরা জানি, যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ইলেকট্রনের দান ঘটে তাকে জারণ বিক্রিয়া এবং যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ইলেকট্রনের গ্রহণ ঘটে তাকে বিজারণ বিক্রিয়া বলা হয়। আবার, যে পদার্থ ইলেকট্রন ত্যাগ করে তাদেরকে বিজারক এবং যে পদার্থ ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাদেরকে জারক পদার্থ বলে। জারণবিজারণ বিক্রিয়া একই সাথে সংঘটিত হয়।
আমরা নিচের বিক্রিয়াটি বিবেচনা করতে পারি।
Na + 1/2 Cl2 → NaCl
এখানে বিজারক পদার্থ Na তার বাইরের শেলের 1টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে জারণ অর্ধবিক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। অপরদিকে বিজারক Na যে ইলেকট্রন ত্যাগ করেছে, জারক পদার্থ Cl সেই ইলেকট্রনকে গ্রহণ করে বিজারণ অর্ধবিক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
জারণ অর্ধবিক্রিয়া Na0 → Na+ + e–
বিজারণ অর্ধবিক্রিয়া Cl0 + e– → Cl–
এই দুই অর্ধ-বিক্রিয়াকে যােগ করলে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া পাওয়া যায়।
জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া: Na0 + Cl0 → Na+ + Cl– NaCl
এখানে স্পষ্টত জারণে বিজারক পদার্থ ইলেকট্রন ত্যাগ করেছে, অপরদিকে বিজারণে জারক পদার্থ ঐ ইলেকট্রন গ্রহণ করেছে। যদি জারক পদার্থ Cl ইলেকট্রন গ্রহণ না করত তাহলে বিজারক পদার্থ Na ইলেকট্রন দান করতে পারত না। অপরদিকে যদি বিজারক পদার্থ Na ইলেকট্রন দান না করত তাহলে জারক পদার্থ Cl ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারত না। সুতরাং যখনই জারণ ঘটবে সাথে সাথে সেখানে বিজারণও ঘটবে। অর্থাৎ জারণ-বিজারণ একটি যুগপৎ প্রক্রিয়া (Simultaneous Process)।
যেহেতু বিজারক ইলেকট্রন দান করে এবং জারক উক্ত ইলেকট্রন গ্রহণ করে সুতরাং জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া মানেই ইলেকট্রন স্থানান্তর প্রক্রিয়া।